বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৮ অপরাহ্ন
ভাঙ্গা(ফরিদপুর)প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ৭ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে শরীফাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাখায়াত হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহষ্পতিবার সকালে ভুক্তভোগী নিজেই ভাঙ্গা থানায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে বিভিন্ন মহল ও কোমলমতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটির ধামাচাপাাঁয় মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি প্রভাবশালী মহল। এ ঘটনায় দুপুরের পর ওই বিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষার্থীরা স্কুলের সামনে ও সড়কপথ অবরোধ করেন এবং প্রধান শিক্ষকের অপসারনের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের সুত্রে জানা যায়, গত ৩০ নভেম্বর সকালে শরীফাবাদ স্কুলে পরিক্ষা দিচ্ছিলেন ওই ছাত্রী।
পরিক্ষায় নকল করার অপরাধে তার পরিক্ষার খাতাপত্র নিয়ে যান স্বরবানী সাহা নামের একজন শিক্ষিকা। এসময় প্রায় ঘন্টাব্যাপী ওই শিক্ষার্থীর খাতাপত্র আটকে রাখা হয়। মেয়েটি কান্নাকাটি করলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে তার অনুমতি আনার কথা বলেন ওই শিক্ষিকা। পরে মেয়েটি প্রধান শিক্ষক শাখায়াত হোসেনের কাছে গিয়ে তার পরিক্ষার খাতাপত্র চাইলে শাখায়াত তার রুমে যেতে বলেন মেয়েটিকে।
পরে রুমের মধ্যে প্রবেশ করতেই প্রধান শিক্ষক শাখায়াত মেয়েটিকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়াসহ মেয়েটির শ্লীলতাহানী ঘটায়। একপর্যায়ে মেয়েটি চিৎকার দিলে তার মুখ চেপে ধরেন প্রধান শিক্ষক শাখায়াত এবং ঘটনাটি কাওকে না জানানোর জন্য মেয়েটিকে হুমকি দেওয়া হয়। পরে মেয়েটি পরিক্ষা না দিয়ে বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে ঘটনা জানায়।
মেয়েটির বাবা জানায়, আমরা গরিব মানুষ। কাজ করি, ভাত খাই। খুব কষ্ট করে মেয়েটির পড়া-লেহা চালাই। তার তিন মেয়ের মধ্যে ভুক্তভোগী ওই মেয়েটিই তার বড় সন্তান। বিষয়টি মিমাংশার জন্য শাখায়াতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহল তার পরিবারকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। কিন্তু তিনি কোন মিমাংশায় যান নি, একটি সুষ্ঠু বিচারের আশায় প্রশাসনকে জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ইতোপূর্বে ওই স্কুলে বিভিন্ন অনিয়ম করাসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানী করার অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক শাখায়াতের বিরুদ্ধে। মানুষের লোক লজ্জার ভয়ে এ বিষয়ে অনেকেই মুখ খুলে না। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ প্রধান শিক্ষক সাখায়াতকে অনতিবিলম্বে স্কুল থেকে প্রত্যাহার করে তার বিরুদ্ধে একটি দৃষ্টান্ত-মূলক স্বাস্তির দাবি জানান তারা।
প্রধান শিক্ষক শাখায়াত হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকের কথা হলে, তিনি তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বিকার করেন। তিনি দাবি করেন, অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে, তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি ঘঠন হয়েছে। ওসির সঙ্গে তিনি ঘটনার বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করছেন। অভিযোগ প্রমাণীত হলে, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।